তামাক ও অ্যালকোহল: ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ

তামাক ও অ্যালকোহল ক্যান্সারের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারের একটি বড় অংশের জন্য তামাক এবং অ্যালকোহল দায়ী। এগুলি ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য সরাসরি ও পরোক্ষভাবে কাজ করে, এবং এই অভ্যাসগুলি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

তামাক – তামাক সেবন, বিশেষ করে সিগারেট ধূমপান, ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে পরিচিত। তামাকে প্রচুর ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান থাকে, যা শরীরের কোষগুলির ডিএনএ-তে পরিবর্তন ঘটায়। এসব মিউটেশন ক্যান্সারের সৃষ্টি করতে পারে। সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয় ফুসফুস, মুখগহ্বর, গলা, কণ্ঠনালী এবং প্যানক্রিয়াসের কোষ। তামাকের ধোঁয়া সরাসরি শ্বাসনালী এবং ফুসফুসে প্রবাহিত হয়, ফলে ফুসফুস ক্যান্সারসহ অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে।

অ্যালকোহল – অ্যালকোহলও ক্যান্সারের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে কাজ করে। অ্যালকোহল সেবন বিশেষ করে দীর্ঘকাল ধরে বেশি পরিমাণে করা হলে, এটি শরীরের কোষগুলির মধ্যে অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটায়, যা ক্যান্সারের সূচনা করতে পারে। অ্যালকোহল লিভার, মস্তিষ্ক, গলা, ফুসফুস, স্তন এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, মদ্যপান এবং তামাক সেবন একত্রে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়।

তামাক এবং অ্যালকোহল দুটোই শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে এবং ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই, এগুলি পরিহার করা ক্যান্সার প্রতিরোধে একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপায়। সচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষা এবং সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে তামাক ও অ্যালকোহলের ব্যবহার কমানো সম্ভব, এবং এর ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।

অতএব, তামাক এবং অ্যালকোহল পরিহারের মাধ্যমে ক্যান্সারসহ অনেক ধরনের মারাত্মক রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। ক্যান্সার প্রতিরোধে আমাদের সচেতনতা এবং জীবনযাত্রার সঠিক পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

লেখকঃ

ডা. বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য্য

সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কোঅর্ডিনেটর

রেডিয়েশন অনকোলজি

এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা।