এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকায় আপনাকে স্বাগতম
হার্টের এই লক্ষণগুলোকে অবহেলা করবেন না

কিছু উপসর্গ সামান্য মনে হলেও, সেগুলো হতে পারে গুরুতর শারীরিক সমস্যার প্রাথমিক সতর্ক সংকেত। চলুন বিস্তারিত জানি—
শ্বাসকষ্ট (Shortness of Breath)
ব্যায়াম বা পরিশ্রমের পর শ্বাসকষ্ট হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বিশ্রামের সময় বা হালকা কাজের সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হলে সতর্ক হোন। এটি হতে পারে—
- ফুসফুসের রোগের লক্ষণ
- হার্টের সমস্যা
- রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া)
অপেক্ষা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, যাতে অবস্থা আরও খারাপ হওয়ার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
নিজের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সংখ্যা জানুন (Know Your Numbers)
শুধু শরীর কেমন লাগছে তাই নয়, আপনার পরীক্ষার ফলও বলে দেয় আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা।
৪০ বছরের নিচে হলে অন্তত একবার পরীক্ষা করুন:
- রক্তচাপ
- ওজন
- ব্লাড সুগার
- ক্রিয়েটিনিন, SGPT
- লিপিড প্রোফাইল
- ইসিজি (ECG)
৪০ বছরের বেশি হলে বা ঝুঁকিতে থাকলে প্রতি ২ বছর পরপর পরীক্ষা করুন এবং যোগ করুন:
- ইকোকার্ডিওগ্রাম (Echocardiogram) — এখানে “Ejection Fraction” দেখুন, যা সাধারণত ৫০% বা তার বেশি হওয়া উচিত।
টিপস: এই সংখ্যা পরিবর্তিত হতে পারে। তাই জানুন, পর্যবেক্ষণ করুন এবং নিজের হৃদয়কে সুরক্ষিত রাখুন।
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া (Loss of Consciousness / Syncope)
হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া সবসময় নিরীহ নয়। এর পেছনে থাকতে পারে—
- হার্টের সমস্যা
- মস্তিষ্কের সমস্যা
- ভ্যাসোভ্যাগাল সিনকোপ (সাধারণত ক্ষতিকর নয়)
প্রথম পদক্ষেপ? কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ নিন। তিনি প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ণয় করবেন।
বুকে ব্যথা (Chest Pain)
বুকের ব্যথাকে কখনোই হালকাভাবে নেবেন না—
- হঠাৎ শুরু
- ক্রমশ বৃদ্ধি
- বুকের মাঝখানে অনুভূত হয়
- ঘাম বা বমির ভাব আসলে
দ্রুত ব্যবস্থা নিন। নিকটস্থ জরুরি বিভাগে যান বা একজন কার্ডিওলজিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া (Palpitations)
নিজের হৃদস্পন্দন অনুভব করলে সেটিকে বলে প্যালপিটেশন। এটি সাধারণত নিরীহ এবং হতে পারে—
- স্ট্রেসের কারণে
- ক্যাফেইন বা অ্যালকোহলের প্রভাবে
- স্বাভাবিক রিদম (সাইনাস রিদম)-এর ফলেও
তবে কখনো এটি ইঙ্গিত দিতে পারে—
- চিকিৎসাযোগ্য হার্টের সমস্যা
- বংশগত গুরুতর রোগ
- ঝুঁকিপূর্ণ রিদম
আপনার ভূমিকা কী? লক্ষণগুলো লক্ষ্য করুন, অবহেলা করবেন না, দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। কারণ, সময়মতো পদক্ষেপই জীবন বাঁচাতে পারে।
আপনি রোগী হোন বা প্রিয়জন — সচেতনতা হলো সবচেয়ে বড় শক্তি। এই লক্ষণগুলো আপনার শরীরের সাহায্য চাওয়ার সংকেত। তাই উপেক্ষা নয়, যত্নই হোক প্রথম পদক্ষেপ।
লেখক:
এমবিবিএস, এফসিপিএস (ইন্টারনাল মেডিসিন), এমডি (কার্ডিওলজি)
সিনিয়র কনসালটেন্ট – কার্ডিওলজি
এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা
