এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকায় আপনাকে স্বাগতম
থ্যালাসেমিয়া: একটি জিনগত রক্তরোগ


ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ্
লেখক
থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তরোগ যা মূলত রক্তের হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের সমস্যার কারণে ঘটে। হিমোগ্লোবিন আমাদের রক্তের লোহিত কণিকাগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা শরীরে অক্সিজেন পরিবহনে সাহায্য করে। এই রোগের ফলে শরীরে হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।
থ্যালাসেমিয়ার কারণ
থ্যালাসেমিয়া একটি জিনগত রোগ, যা পিতামাতার মাধ্যমে সন্তানের মধ্যে প্রবাহিত হয়। যদি একজন ব্যক্তি থ্যালাসেমিয়ার বাহক হন, তবে সাধারণত তাদের কোনো গুরুতর লক্ষণ দেখা যায় না। কিন্তু যদি দু’জন বাহক অভিভাবকের সন্তান হন, তবে শিশুটি থ্যালাসেমিয়া মেজর আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
থ্যালাসেমিয়ার লক্ষণ
- অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা
- ত্বক ফ্যাকাশে বা হলুদাভ হওয়া
- ক্ষুধামন্দা ও ওজন কমে যাওয়া
- শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া
- হাড়ের গঠন অস্বাভাবিক হয়ে যাওয়া
চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
থ্যালাসেমিয়া মেজরের জন্য প্রধান চিকিৎসা হলো নিয়মিত রক্তসঞ্চালন ও আয়রন চেলেশন থেরাপি, যা শরীরে অতিরিক্ত আয়রন জমা হওয়া প্রতিরোধ করে। কিছু ক্ষেত্রে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন (Bone Marrow Transplant) কার্যকর হতে পারে।
এই রোগ প্রতিরোধের জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো জেনেটিক পরামর্শ গ্রহণ। বিবাহের আগে থ্যালাসেমিয়া বাহক পরীক্ষা করানো উচিত, যাতে পরবর্তী প্রজন্মকে এই রোগ থেকে রক্ষা করা যায়।
থ্যালাসেমিয়া একটি গুরুতর কিন্তু প্রতিরোধযোগ্য রোগ। সচেতনতা বৃদ্ধি ও আগেভাগে পরীক্ষা করানোর মাধ্যমে এই রোগের প্রকোপ কমানো সম্ভব। তাই সবাইকে থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।
লেখকঃ
সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কোঅর্ডিনেটর
হেমাটোলজি এন্ড স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্ট
এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা।
