Welcome to Evercare Hospital Chattogram.
সিস্টিক ফাইব্রোসিস: একটি জেনেটিক রোগ

সিস্টিক ফাইব্রোসিস হল একটি জিনগত রোগ যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ, বিশেষ করে ফুসফুস এবং অগ্ন্যাশয়কে প্রভাবিত করে। এই রোগে, শরীরে একটি ঘন এবং আঠালো ধরনের শ্লেষ্মা তৈরি হয় যা ফুসফুস এবং অগ্ন্যাশয়ের নালীগুলিকে ব্লক করে দেয়। ফলে, শ্বাসকষ্ট, পাচনতন্ত্রের সমস্যা এবং অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে।
কারণ
সিস্টিক ফাইব্রোসিস একটি জিনগত রোগ। এই রোগের জন্য দায়ী জিনকে সিস্টিক ফাইব্রোসিস ট্রান্সমেম্ব্রেন কন্ডাক্টেন্স রেগুলেটর (CFTR) জিন বলা হয়। এই জিনে একটি ত্রুটির কারণে শরীরে তৈরি শ্লেষ্মা ঘন এবং আঠালো হয়ে পড়ে।
লক্ষণ
সিস্টিক ফাইব্রোসিসের লক্ষণ শৈশবকাল থেকেই দেখা দিতে পারে। সাধারণত এই রোগের লক্ষণগুলি হল:
- শ্বাসকষ্ট: হাঁপানো, কাশি, বুকে টান ইত্যাদি।
- পাচনতন্ত্রের সমস্যা: ওজন কম হওয়া, মল খুব শক্ত হওয়া, পেট ফোলা ইত্যাদি।
- ঘন শ্লেষ্মা: নাক, ফুসফুস এবং অন্যান্য অঙ্গে ঘন শ্লেষ্মা জমে থাকা।
- পুনরাবৃত্ত সংক্রমণ: ফুসফুসে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হওয়া।
নির্ণয়
সিস্টিক ফাইব্রোসিস নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে:
- ঘাম পরীক্ষা: এই পরীক্ষায় ঘামে লবণের পরিমাণ মাপা হয়। সিস্টিক ফাইব্রোসিসে ঘামে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে।
- ফুসফুসের ফাংশন পরীক্ষা: এই পরীক্ষায় ফুসফুস কতটা ভালো কাজ করছে তা মাপা হয়।
- জিনগত পরীক্ষা: এই পরীক্ষায় CFTR জিনে কোনো ত্রুটি আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়।
ব্যবস্থাপনা
সিস্টিক ফাইব্রোসিসের জন্য কোনো নিরাময় নেই, তবে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব। চিকিৎসায় সাধারণত নিম্নলিখিত পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত থাকে:
- শ্বাসচিকিৎসা: ইনহেলার ব্যবহার করে শ্বাসনালি খুলে দিতে সাহায্য করা হয়।
- পাচনতন্ত্রের চিকিৎসা: পাচক এনজাইম এবং ভিটামিন দেওয়া হয়।
- শারীরিক চিকিৎসা: শ্বাসকষ্ট কমাতে এবং শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে শারীরিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
- অ্যান্টিবায়োটিক: সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন
সিস্টিক ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন করা জরুরী। এর মধ্যে রয়েছে:
- সুষম খাদ্য গ্রহণ: যাতে শরীরের পুষ্টির প্রয়োজন মিটতে পারে।
- নিয়মিত ব্যায়াম: শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে।
- ধূমপান এবং মদ্যপান পরিহার: এগুলি ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর।
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চেকআপ: রোগের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য।
উপসংহার: সিস্টিক ফাইব্রোসিস একটি জটিল রোগ যা দীর্ঘস্থায়ী চিকিৎসা প্রয়োজন। তবে, সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব।