Evercarebd
15 December 2024

অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন এবং অ্যানাফিল্যাক্সিস: একটি বিস্তারিত আলোচনা

অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন এবং অ্যানাফিল্যাক্সিস: একটি বিস্তারিত আলোচনা
Author

Dr. Rivu Raj Chakraborty

Author

অ্যালার্জি বা অতিসংবেদনশীলতা আমাদের শরীরের একটি প্রাকৃতিক প্রতিক্রিয়া যা নির্দিষ্ট পদার্থের প্রতি অতিরিক্ত সংবেদনশীলতার কারণে হয়। এই পদার্থগুলিকে অ্যালার্জেন বলা হয়। অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সাধারণত হালকা হয়, যেমন চুলকানি, নাক ফুলে যাওয়া ইত্যাদি। কিন্তু কখনও কখনও এটি খুব গুরুতর হয়ে পড়তে পারে এবং অ্যানাফিল্যাক্সিসের মতো জীবনঘাতী অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে।

অ্যালার্জির কারণ

অ্যালার্জির কারণ হিসাবে বিভিন্ন ধরনের পদার্থকে দায়ী করা যেতে পারে, যেমন:

  • খাদ্য: বাদাম, মাছ, শেলফিশ, ডিম, গম, সয়াবিন ইত্যাদি।
  • ঔষধ: পেনিসিলিন, অ্যাসপিরিন ইত্যাদি।
  • পরাগ: গাছ, ঘাস, আগাছা ইত্যাদির পরাগ।
  • পোকার বিষ: মৌমাছি, হর্নেট, মশা ইত্যাদির বিষ।
  • লাটেক্স: গ্লাভস, বেলুন ইত্যাদিতে ব্যবহৃত লাটেক্স।
  • ধুলোর কণা: ঘরের ধুলো, পশুর লোম ইত্যাদি।

অ্যানাফিল্যাক্সিস

অ্যানাফিল্যাক্সিস হল একটি গুরুতর এবং দ্রুত প্রবাহিত হওয়া অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া যা শরীরের একাধিক অঙ্গকে প্রভাবিত করে। এটি একটি জীবনঘাতী অবস্থা হতে পারে।

অ্যানাফিল্যাক্সিসের লক্ষণ

অ্যানাফিল্যাক্সিসের লক্ষণগুলি সাধারণত অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে আসার কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টার মধ্যে দেখা যায়। সাধারণ লক্ষণগুলি হল:

  • ত্বকের প্রতিক্রিয়া: চুলকানি, ফুসকুড়ি, রক্তচাপ, ঠোঁট ফুলে যাওয়া
  • শ্বাসকষ্ট: হাঁপানি, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
  • হৃদরোগের সমস্যা: রক্তচাপ কমে যাওয়া, দ্রুত হৃদস্পন্দন
  • পেটের সমস্যা: বমি বমি ভাব, বমি, পেট ব্যথা
  • চেতনা হারানো

অ্যানাফিল্যাক্সিসের জরুরি ব্যবস্থাপনা

অ্যানাফিল্যাক্সিস একটি জরুরি অবস্থা। যদি কেউ অ্যানাফিল্যাক্সিসের লক্ষণ দেখায় তাহলে অবিলম্বে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নিতে হবে:

  • এপিনেফ্রিন ইনজেকশন: অ্যানাফিল্যাক্সিসের চিকিৎসায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ হল এপিনেফ্রিন। যদি আপনার অ্যানাফিল্যাক্সিসের ইতিহাস থাকে তাহলে আপনার সাথে সবসময় একটি অটো-ইনজেক্টর রাখা উচিত এবং প্রয়োজনে নিজেই বা অন্য কারোকে ইনজেকশন দিতে হবে।
  • ৯৯৯ নম্বরে কল করুন: অ্যাম্বুল্যান্সে কল করে অবিলম্বে হাসপাতালে যান।
  • অ্যালার্জেন থেকে দূরে থাকুন: অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে আসা বন্ধ করুন।
  • শুয়ে থাকুন: পা উঁচু করে শুয়ে থাকুন।
  • শ্বাস নিতে সাহায্য করুন: যদি ব্যক্তি শ্বাস নিতে কষ্ট পায় তাহলে তাকে বসিয়ে বা দাঁড় করিয়ে রাখুন এবং শ্বাস নিতে সাহায্য করুন।

অ্যালার্জি প্রতিরোধ

অ্যালার্জির প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে:

  • অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলা: যতটা সম্ভব অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে আসা এড়িয়ে চলুন।
  • দুধের নমুনা: স্তন্যপান করানো শিশুর ক্ষেত্রে দুধের নমুনা পরীক্ষা করা হতে পারে।
  • ঔষধ সেবন: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যালার্জি ওষুধ সেবন করুন।
  • ইমিউনোথেরাপি: কিছু ক্ষেত্রে ইমিউনোথেরাপি অ্যালার্জির চিকিৎসায় কার্যকর হতে পারে।

মনে রাখবেন: অ্যানাফিল্যাক্সিস একটি জীবনঘাতী অবস্থা। যদি আপনার অ্যানাফিল্যাক্সিসের ইতিহাস থাকে তাহলে আপনার সাথে সবসময় একটি অটো-ইনজেক্টর রাখা উচিত এবং আপনার পরিবার এবং বন্ধুদেরকে এর ব্যবহার সম্পর্কে জানিয়ে রাখা উচিত।