Evercarebd
Welcome to Evercare Hospital Chattogram.
01 December 2024
কোমর ব্যাথা: কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ


Dr. Md. Nasir Uddin
Author
কোমর ব্যাথা এক অত্যন্ত সাধারণ সমস্যা, যা একবার না একবার অনেকের জীবনেই দেখা দেয়। কাজের চাপ, ভুল ভঙ্গি, আঘাত, অথবা কোনো রোগের কারণে কোমর ব্যাথা হতে পারে। এই ব্যাথা কখনো কখনো কয়েকদিনের মধ্যেই সেরে যায়, আবার কখনো কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়তে পারে।
কোমর ব্যাথার কারণ:
- ভুল ভঙ্গি: দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসে থাকা, ভারী জিনিস তোলা, অথবা অনুপযুক্ত ভঙ্গিতে ঘুমানোর কারণে কোমরের পেশী ও স্নায়ুতে টান পড়ে এবং ব্যাথা হয়।
- পেশির টান: কোমরের পেশীতে টান পড়লে তীব্র ব্যাথা হয়।
- ডিস্ক সমস্যা: মেরুদণ্ডের ডিস্ক ফেটে গেলে বা স্লিপ হয়ে গেলে কোমর ব্যাথা হতে পারে।
- আর্থ্রাইটিস: প্রদাহজনিত রোগ, যেমন অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের কারণে কোমর ব্যাথা হতে পারে।
- স্পনডাইলোলিস্থিসিস: মেরুদণ্ডের একটি কশেরুকা আরেকটি কশেরুকার উপর সরে গেলে এই সমস্যা হয়।
- স্পনডাইলাইটিস: মেরুদণ্ডের জয়েন্টে প্রদাহ হওয়াকে স্পনডাইলাইটিস বলে।
- কিডনি বা মূত্রথলির সমস্যা: কিডনি বা মূত্রথলির সংক্রমণের কারণেও কোমর ব্যাথা হতে পারে।
- ক্যান্সার: কম ক্ষেত্রে, কোমরের ক্যান্সারের কারণেও ব্যাথা হতে পারে।
কোমর ব্যাথার লক্ষণ:
- তীব্র বা হালকা কোমর ব্যাথা
- কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথা ছড়িয়ে পড়া
- কোমর নড়াচড়া করতে কষ্ট হওয়া
- পা বা পায়ের আঙুল অসাড় হয়ে যাওয়া
কোমর ব্যাথার চিকিৎসা:
- দেখাশুনা: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, কোমর ব্যাথা নিজে থেকেই কয়েকদিনের মধ্যে সেরে যায়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, গরম পানি সেকে স্বস্তি পাওয়া যায়।
- ফিজিওথেরাপি: ফিজিওথেরাপি ব্যায়ামের মাধ্যমে কোমরের পেশী শক্তিশালী করা হয় এবং ব্যাথা কমাতে সাহায্য করা হয়।
- ওষুধ: ব্যথানাশক ওষুধ, পেশী শিথিলকারী ওষুধ, এবং স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হতে পারে।
- সার্জারি: খুবই জটিল ক্ষেত্রে, সার্জারির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
কোমর ব্যাথা প্রতিরোধ:
- সঠিক ভঙ্গি: দাঁড়ানো, বসা, এবং ঘুমানোর সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম করলে কোমরের পেশী শক্তিশালী হয় এবং ব্যাথার সম্ভাবনা কমে যায়।
- ভারী জিনিস তোলার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন: ভারী জিনিস তোলার সময় গোড়ালি থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে শরীর সোজা করে তুলুন।
- স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন: অতিরিক্ত ওজন কোমরের উপর চাপ বাড়িয়ে দেয়।
- মুক্ত থাকুন: মানসিক চাপ কোমর ব্যাথার কারণ হতে পারে।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন:
- যদি কোমর ব্যাথা কয়েক দিনের মধ্যে না কমে।
- যদি ব্যাথা খুব তীব্র হয়।
- যদি ব্যাথার সাথে জ্বর, অসাড়তা, বা দুর্বলতা অনুভূত হয়।
উপসংহার:
কোমর ব্যাথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, একে উপেক্ষা করা উচিত নয়। সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে কোমর ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।