Welcome to Evercare Hospital Chattogram.
ঘাড় ব্যথা: কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিকার


Dr. Md. Nasir Uddin
Author
আমাদের অনেকেরই দৈনন্দিন জীবনে ঘাড় ব্যথা একটা সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কম্পিউটারে কাজ করা, মোবাইল ফোন ব্যবহার, ভুল ভঙ্গিতে ঘুমানো ইত্যাদি কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা কখনও কখনও এত তীব্র হয় যে আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে। আজ আমরা ঘাড় ব্যথার কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
ঘাড় ব্যথার কারণ:
- ভুল ভঙ্গি: দীর্ঘ সময় একই ভঙ্গিতে বসে থাকা, মাথা নিচু করে কাজ করা ইত্যাদি ঘাড়ের পেশীতে চাপ সৃষ্টি করে।
- আঘাত: দুর্ঘটনা, খেলাধুলা বা কোনো ধরনের শারীরিক আঘাতের ফলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।
- মেরুদণ্ডের সমস্যা: স্পন্ডাইলোসিস মেরুদণ্ডের সমস্যা ঘাড় ব্যথার অন্যতম কারণ।
- মাসল স্প্যাজম: ঘাড়ের পেশীতে অতিরিক্ত চাপ পড়লে মাসল স্প্যাজম হতে পারে।
- অন্যান্য কারণ: সংক্রমণ, টিউমার, আর্থ্রাইটিস ইত্যাদিও ঘাড় ব্যথার কারণ হতে পারে।
ঘাড় ব্যথার লক্ষণ:
- ঘাড়ে তীব্র বা হালকা ব্যথা
- ঘাড়ে জ্বালাপোড়া
- ঘাড়ে কঠিনতা
- হাতে বা বাহুতে ব্যথা
- মাথাব্যথা
ঘাড় ব্যথার চিকিৎসা:
ঘাড় ব্যথার চিকিৎসা কারণের উপর নির্ভর করে। সাধারণত ঘাড় ব্যথার চিকিৎসায় নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা হয়:
- দোকানে পাওয়া ওষুধ: ব্যথানাশক ও পেশী শিথিলকারী ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
- ফিজিওথেরাপি: ফিজিওথেরাপি ব্যায়াম ঘাড়ের পেশী শক্তিশালী করতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- হিট বা আইস থেরাপি: হিট বা আইস থেরাপি ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- ট্রাকশন: ট্রাকশন পদ্ধতির মাধ্যমে মেরুদণ্ডের উপরের চাপ কমানো যায়।
- ইনজেকশন: কিছু ক্ষেত্রে স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হতে পারে।
- সার্জারি: যদি অন্য কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি কাজ না করে তবে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
ঘাড় ব্যথা প্রতিরোধ:
ঘাড় ব্যথা প্রতিরোধে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে:
- সঠিক ভঙ্গি: দীর্ঘ সময় একই ভঙ্গিতে বসে থাকা এড়িয়ে চলুন। কম্পিউটারে কাজ করার সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম: ঘাড়ের পেশী শক্তিশালী করার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন: অতিরিক্ত ওজন মেরুদণ্ডের উপর চাপ বাড়ায়।
- ভারী বস্তু না তুলুন: ভারী বস্তু তুলতে গেলে ঘাড়ে চাপ পড়ে।
- ঘাড়ে গরম বা ঠান্ডা কম্প্রেস দিন: ব্যথার তীব্রতা কমাতে ঘাড়ে গরম বা ঠান্ডা কম্প্রেস দিতে পারেন।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন:
- যদি ঘাড় ব্যথা দীর্ঘদিন ধরে থাকে
- যদি ব্যথার সাথে অন্য কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, যেমন হাতে বা বাহুতে অনুভূতি হারানো ইত্যাদি
- যদি ব্যথা দিনে দিন বেড়ে যায়
- যদি ব্যথা দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা দেয়
উপসংহার:
ঘাড় ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, এটি গুরুতর কোনো রোগের লক্ষণও হতে পারে। তাই ঘাড় ব্যথা হলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সঠিক চিকিৎসা নিলে ঘাড় ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।