Evercarebd
15 December 2024

বিষক্রিয়া ও ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রার ব্যবস্থাপনা

বিষক্রিয়া ও ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রার ব্যবস্থাপনা
Author

Dr. Rivu Raj Chakraborty

Author

বিষক্রিয়া এবং ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রা একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি ঘটতে পারে দুর্ঘটনাবশত, আত্মহত্যার চেষ্টা, বা ইচ্ছাকৃতভাবে অতিরিক্ত পরিমাণে ওষুধ গ্রহণের কারণে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসা জরুরি।

বিভিন্ন ধরনের বিষক্রিয়া

বিষক্রিয়ার ধরন নির্ভর করে বিষাক্ত পদার্থের ধরন, পরিমাণ এবং শরীরে প্রবেশের পদ্ধতির উপর। সাধারণত বিষক্রিয়া হতে পারে:

  • ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রা: যেকোনো ধরনের ওষুধ অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করা বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে।
  • রাসায়নিক পদার্থ: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পদার্থ, কীটনাশক, গৃহস্থালির পণ্য ইত্যাদি গ্রহণ করলে বিষক্রিয়া হতে পারে।
  • খাদ্য: কিছু খাবার, যেমন মশরুম, মাছ ইত্যাদি বিষাক্ত হতে পারে।
  • ভারী ধাতু: সীসা, পারদ ইত্যাদি ভারী ধাতু শরীরে প্রবেশ করলে বিষক্রিয়া হতে পারে।

অ্যান্টডোট ব্যবহার

অ্যান্টডোট হল একটি ওষুধ যা বিষের প্রভাব কমাতে বা রোধ করতে ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি বিষের জন্য আলাদা অ্যান্টডোট থাকে। উদাহরণস্বরূপ, অ্যাসিটামিনোফেনের বিষক্রিয়ার জন্য এন-এসেটিলসিস্টাইন ব্যবহৃত হয়।

ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রার কারণে সৃষ্ট জটিলতা

ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রা গ্রহণের ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে, যেমন:

  • হৃদপিণ্ড: অ্যারিথমিয়া, হার্ট ফেইলিউর
  • মস্তিষ্ক: বিভ্রান্তি, কোমা, মৃত্যু
  • কিডনি: বৃক্কের কার্যকারিতা কমে যাওয়া
  • যকৃত: যকৃতের ক্ষতি
  • শ্বাসনালী: শ্বাসকষ্ট

বিষক্রিয়ার লক্ষণ

বিষক্রিয়ার লক্ষণ বিষাক্ত পদার্থের ধরন এবং পরিমাণের উপর নির্ভর করে। সাধারণ লক্ষণগুলি হল:

  • বমি
  • ডায়রিয়া
  • পেট ব্যথা
  • মাথা ঘোরা
  • দুর্বলতা
  • চেতনা হারানো
  • শ্বাসকষ্ট

বিষক্রিয়ার ব্যবস্থাপনা

বিষক্রিয়ার ব্যবস্থাপনা নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করে করা হয়:

  • দ্রুত চিকিৎসা: বিষক্রিয়ার ক্ষেত্রে সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হলে রোগীর সুস্থতার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
  • বিষাক্ত পদার্থ শনাক্তকরণ: কোন পদার্থের কারণে বিষক্রিয়া হয়েছে তা শনাক্ত করা।
  • শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়া: বমি করানো, গ্যাস্ট্রিক ল্যাভেজ, হিমোডায়ালিসিস ইত্যাদির মাধ্যমে।
  • অ্যান্টডোট প্রদান: প্রয়োজনীয় অ্যান্টডোট প্রদান করা।
  • সমর্থন চিকিৎসা: শ্বাসকষ্ট, রক্তচাপ কমে যাওয়া ইত্যাদি জটিলতার জন্য সমর্থন চিকিৎসা দেওয়া।

প্রতিরোধ

বিষক্রিয়া প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে:

  • ওষুধ সর্বদা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা।
  • বাচ্চাদের নাগালের বাইরে ওষুধ রাখা।
  • কীটনাশক, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পদার্থ ইত্যাদি সঠিকভাবে রাখা।
  • খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত করা।

মনে রাখবেন: বিষক্রিয়া একটি জীবনঘাতী অবস্থা। যদি কেউ বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখায় তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।