কিডনি রোগ এবং গর্ভাবস্থা: একটি জটিল সম্পর্ক

কিডনি রোগ এবং গর্ভাবস্থা, দুটিই মহিলাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যখন এই দুটি একসাথে জড়িত হয়, তখন অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা জরূরি। কিডনি রোগ থাকা অবস্থায় গর্ভধারণ করা, বা গর্ভাবস্থায় কিডনি রোগের জটিলতা দেখা দেওয়া, দুই ক্ষেত্রেই বিশেষ যত্ন প্রয়োজন।

কিডনি রোগ এবং গর্ভাবস্থা: কেন এত জটিল?

  • গর্ভাবস্থায় শরীরের পরিবর্তন: গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার শরীরে অনেক পরিবর্তন হয়। রক্তের পরিমাণ বাড়ে, কিডনিকে আরও বেশি কাজ করতে হয়। যদি এর আগে থেকেই কিডনি রোগ থাকে, তাহলে এই বাড়তি চাপ কিডনির উপর আরও পড়ে।
  • গর্ভাবস্থা-জনিত কিডনি সমস্যা: কিছু ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার কারণে নতুন কিডনি সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন, প্রেগন্যান্সি-ইন্ডুসড হাইপারটেনশন (গর্ভাবস্থা-জনিত উচ্চ রক্তচাপ) কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
  • ঔষধের সীমাবদ্ধতা: গর্ভাবস্থায় অনেক ওষুধ সেবন করা নিরাপদ হয় না। কিডনি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অনেক ওষুধই গর্ভবতী মহিলার জন্য নিরাপদ নয়।

কিডনি রোগ থাকা অবস্থায় গর্ভধারণ

যদি কোন মহিলার কিডনি রোগ থাকে এবং তিনি গর্ভধারণ করতে চান, তাহলে তাকে অবশ্যই একজন নেফ্রোলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে। নেফ্রোলজিস্ট হলেন কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি রোগীর কিডনির অবস্থা পরীক্ষা করে এবং গর্ভধারণের ঝুঁকি ও সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন।

গর্ভাবস্থায় কিডনি রোগের লক্ষণ

  • সোজন: পা, হাত, মুখ ফুলে যাওয়া।
  • উচ্চ রক্তচাপ: রক্তচাপের মাত্রা বেড়ে যাওয়া।
  • প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া: প্রস্রাবের রং পরিবর্তন হওয়া।
  • ক্লান্তি: সারাক্ষণ ক্লান্তি অনুভব করা।
  • বমি বমি ভাব: বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

গর্ভাবস্থায় কিডনি রোগের চিকিৎসা

  • ওষুধ: কিছু ক্ষেত্রে কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য নিরাপদ ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
  • ডায়ালাইসিস: যদি কিডনি পুরোপুরি কাজ না করে, তাহলে ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হতে পারে।
  • গর্ভাবস্থার পরিচালনা: নিয়মিত চেকআপ, বিশ্রাম এবং সুষম খাদ্য গর্ভাবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে।

কিডনি রোগ এবং গর্ভাবস্থা: সতর্কতা

  • ডাক্তারের পরামর্শ: অবশ্যই একজন নেফ্রোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
  • নিয়মিত চেকআপ: গর্ভাবস্থার সময় নিয়মিত চেকআপ করান।
  • ওষুধ সেবন: ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ খাবেন না।
  • সুষম খাদ্য: সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন।
  • বিশ্রাম: পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।

কিডনি রোগ থাকা অবস্থায় গর্ভধারণ একটি জটিল বিষয়। তবে, সঠিক চিকিৎসা এবং যত্নের মাধ্যমে সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়া সম্ভব।

ডায়াবেটিক ফুট: একটি গুরুতর সমস্যা

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পায়ের যত্ন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দীর্ঘদিন ধরে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে থাকলে তা পায়ের স্নায়ু এবং রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই ক্ষতির ফলেই ডায়াবেটিক ফুট নামক একটি জটিলতা দেখা দেয়।

ডায়াবেটিক ফুট কী?

ডায়াবেটিক ফুট হল ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে দেখা দেওয়া একটি সাধারণ জটিলতা, যেখানে পায়ের স্নায়ু এবং রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পায়ে আলসার, সংক্রমণ এবং হাড়ের ক্ষয় হতে পারে।

কেন হয় ডায়াবেটিক ফুট?

  • উচ্চ রক্তচাপ: দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
  • স্নায়ুর ক্ষতি: উচ্চ রক্তচাপের ফলে পায়ের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় এবং ফলে ব্যথা, ঝিনঝিনানি বা অনুভূতিহীনতা অনুভূত হয়।
  • রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা: ক্ষতিগ্রস্ত রক্তনালী রক্ত সঞ্চালনে বাধা দেয়, ফলে পায়ে আঘাত সারতে দেরি হয় এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
  • দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: ডায়াবেটিস রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, ফলে ছোটখাটো আঘাতও সংক্রমিত হতে পারে।

ডায়াবেটিক ফুটের লক্ষণ

  • পায়ে ব্যথা, ঝিনঝিনানি বা অনুভূতিহীনতা
  • পায়ে ফোস্কা, ক্ষত বা আলসার
  • পায়ে লালচে ভাব, তাপ বা ফুলে যাওয়া
  • পায়ে দুর্গন্ধ
  • নখের রঙ পরিবর্তন বা নখের নিচে পুঁজ জমে থাকা

ডায়াবেটিক ফুটের জটিলতা

  • হাড়ের সংক্রমণ: আলসার সংক্রমিত হয়ে হাড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  • গ্যাংগ্রিন: সংক্রমণের ফলে পায়ের মাংসপেশি, ত্বক এবং অন্যান্য টিস্যু মরে যেতে পারে।
  • অঙ্গচ্ছেদ: গুরুতর ক্ষেত্রে পায়ের আঙুল বা পুরো পা কেটে ফেলতে হয়।

ডায়াবেটিক ফুট প্রতিরোধ

  • রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: ডায়াবেটিসের ওষুধ নিয়মিত খাওয়া, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা।
  • পায়ের যত্ন: প্রতিদিন পায়ে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে ফেলুন।
  • জুতা পরার সময় সাবধানতা: আঁটসাঁট জুতা পরবেন না।
  • পায়ের ত্বক নরম রাখুন: ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন।
  • পায়ের নখ কাটার সময় সাবধানতা: নখ কাটার সময় কোনো আঘাত না লাগার মতো করে কাটুন।
  • নিয়মিত পায়ের পরীক্ষা: ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত পায়ের পরীক্ষা করান।

ডায়াবেটিক ফুটের চিকিৎসা

ডায়াবেটিক ফুটের চিকিৎসা আলসারের তীব্রতা এবং সংক্রমণের ধরনের উপর নির্ভর করে। চিকিৎসায় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:

  • আলসার পরিষ্কার করা
  • সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক
  • মৃত টিস্যু অপসারণ
  • সার্জারি
  • হাইপারবারিক চেম্বার চিকিৎসা

ডায়াবেটিক ফুট একটি গুরুতর সমস্যা যা অবহেলা করলে অঙ্গচ্ছেদ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পায়ের যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

পিআইসিইউ: শিশুদের জন্য জীবনদানকারী আশ্রয়

পিআইসিইউ বা পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট হলো এমন একটি বিশেষ বিভাগ যেখানে গুরুতর অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসা করা হয়। এই ইউনিটে শিশুদের স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখা হয় এবং তাদেরকে বিশেষ যত্ন দেওয়া হয় যাতে তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।

শিশু স্বাস্থ্যসেবায় পিআইসিইউ-এর গুরুত্ব

শিশুরা বড়দের তুলনায় অনেক বেশি দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে এবং তাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাও কম থাকে। ফলে অনেক সময় সাধারণ একটি অসুখই শিশুর জন্য জীবনঘাতী হয়ে উঠতে পারে। পিআইসিউ-তে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা ২৪ ঘণ্টা শিশুদের উপর নজর রাখেন এবং তাদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন।

পিআইসিইউ শিশুদের জীবন বাঁচায় কীভাবে?

  • জটিল রোগের চিকিৎসা: পিআইসিউ-তে জন্মগত হৃদরোগ, মস্তিষ্কের জটিল সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, সংক্রমণ, মারাত্মক ডেঙ্গু ইত্যাদি গুরুতর রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা করা হয় (আন্তর্জাতিক প্রোটোকল অনুযায়ী)।
  • অস্ত্রোপচারের পরের যত্ন: জটিল অস্ত্রোপচারের পর শিশুদের বিশেষ যত্ন দেওয়া হয়, যেমন হৃদরোগের অস্ত্রোপচার, মস্তিষ্কের টিউমারের অস্ত্রোপচার ইত্যাদি।
  • দুর্ঘটনাজনিত আঘাতের চিকিৎসা: সড়ক দুর্ঘটনা, পড়ে যাওয়া ইত্যাদির ফলে আহত শিশুদের চিকিৎসা করা হয়।
  • জীবন রক্ষাকারী যন্ত্রপাতি: পিআইসিউ-তে ভেন্টিলেটর, মনিটর,  TCO2, এবিজি মেশিন  ইত্যাদি জীবন রক্ষাকারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে শিশুদের জীবন বাঁচানো হয়।
  • বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান: পিআইসিউ-তে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ, নবজাতক বিশেষজ্ঞ, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকেন যারা শিশুদের চিকিৎসা করেন।

পিআইসিউ শিশুদের স্বাস্থ্যের উন্নতি কীভাবে করে?

  • দ্রুত সুস্থতা: পিআইসিউ-তে শিশুদের দ্রুত সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়।
  • জটিলতা প্রতিরোধ: পিআইসিউ-তে শিশুদের জটিলতা থেকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
  • মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন: পিআইসিউ-তে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া হয় যাতে তারা মানসিকভাবে সুস্থ থাকে।
  • মাতা-পিতার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা: পিআইসিউ-তে মাতা-পিতাদেরকে তাদের শিশুর সাথে সময় কাটাতে উৎসাহিত করা হয় যাতে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
  • শিক্ষা সচেতনতা: পিআইসিউ-তে মাতা-পিতাদেরকে শিশুর যত্ন নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষিত করা হয়।

উপসংহার:

পিআইসিউ শিশুদের জন্য একটি আশার আলো। এই ইউনিটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং নার্সরা শিশুদের সর্বোত্তম চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। যদি আপনার শিশু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাহলে দেরি না করে তাকে পিআইসিউ-তে নিয়ে যান।

কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য: এক অন্বেষণ

কিশোর-কিশোরীরা হলো আমাদের সমাজের ভবিষ্যৎ। এই সময়কালে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে দ্রুত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। এই পরিবর্তনগুলি তাদের জীবনের সব দিককে প্রভাবিত করে, সহকর্মীদের সাথে সম্পর্ক, পরিবারের সাথে সম্পর্ক, এবং তাদের নিজের পরিচয় খুঁজে পাওয়া। এই সময়ে, কিশোর-কিশোরীরা বিভিন্ন মানসিক চাপের সম্মুখীন হয়, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে।

কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সাধারণ মানসিক সমস্যা

কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে কিছু সাধারণ মানসিক সমস্যা হল:

  • উদ্বেগ: পরীক্ষা, সামাজিক অনুষ্ঠান, ভবিষ্যতের চিন্তা ইত্যাদি কারণে কিশোর-কিশোরীরা উদ্বেগ অনুভব করতে পারে।
  • ডিপ্রেশন: কিশোর-কিশোরীরাও ডিপ্রেশনে ভুগতে পারে। এর লক্ষণ হতে পারে মন খারাপ, আনন্দহীনতা, ক্লান্তি, ঘুমের সমস্যা, খাবারের রুচি হারানো ইত্যাদি।
  • মনোযোগ ঘাটতি হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার (ADHD): এটি একটি নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার যা মনোযোগ কেন্দ্রীকরণ, অধিক সক্রিয়তা এবং আবেগপ্রবণ আচরণের সাথে সম্পর্কিত।
  • সামাজিক উদ্বেগ: অন্যদের সামনে কথা বলতে ভয় পাওয়া, নতুন পরিস্থিতিতে অস্বস্তি বোধ করা ইত্যাদি সামাজিক উদ্বেগের লক্ষণ।
  • খাওয়ার ব্যাধি: এনিরেক্সিয়া নার্ভোসা, বুলিমিয়া নার্ভোসা ইত্যাদি খাওয়ার ব্যাধি কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে দেখা যেতে পারে।

 

কারণ

কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মানসিক সমস্যার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে, যেমন:

  • হরমোনের পরিবর্তন: কিশোর-কিশোরীরা শারীরিকভাবে দ্রুত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়, যা তাদের মেজাজ এবং আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে।
  • সামাজিক চাপ: স্কুল, বন্ধুবান্ধব, এবং সামাজিক মিডিয়া থেকে আসা চাপ কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
  • পরিবারিক সমস্যা: পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব, অস্থিরতা, বা অভাব ইত্যাদি কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
  • জৈবিক কারণ: কিছু মানসিক সমস্যা জৈবিক কারণেও হতে পারে।

 

সমাধান

কিশোর-কিশোরীদের মানসিক সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে, যেমন:

  • থেরাপি: কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি (CBT) এবং অন্যান্য ধরনের থেরাপি কিশোর-কিশোরীদের মানসিক সমস্যা মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে।
  • ওষুধ: কিছু ক্ষেত্রে, মানসিক রোগের চিকিৎসায় ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে।
  • পরিবারের সমর্থন: পরিবারের সদস্যরা কিশোর-কিশোরীদের সমর্থন করে এবং তাদের সাথে কথা বলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
  • স্কুলের সমর্থন: স্কুল কর্তৃপক্ষ কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং তাদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা উচিত।
  • স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং পর্যাপ্ত ঘুম কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।

 

কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং তাদের সমর্থন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার কোনো কিশোর-কিশোরী মানসিক সমস্যায় ভুগছেন বলে মনে করেন, তাহলে তাকে একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে দেখা করার পরামর্শ দিন।

 

এভারকেয়ার ক্যান্সার সেন্টার: আপনার পাশে সবসময়

ক্যান্সার, একটি শব্দ যা শুনলেই আমাদের মনে আতঙ্ক জাগে। কিন্তু আজকের সময়ে ক্যান্সার আর অসাধ্য রোগ নয়। যথাযথ চিকিৎসা এবং যত্নের মাধ্যমে ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব। আর এই যাত্রায় আপনার পাশে থাকবে এভারকেয়ার ক্যান্সার সেন্টার।

এভারকেয়ার কেন?

এভারকেয়ার ক্যান্সার সেন্টার বাংলাদেশের অন্যতম আধুনিক এবং বিশ্বমানের ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র। এখানে রোগীরা পান:

  • বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক: বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মিলেমিশে রোগীর চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করেন।
  • আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা: সার্জারি, কিমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি সহ সব ধরনের ক্যান্সার চিকিৎসা এখানে পাওয়া যায়।
  • মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা: মনোবিজ্ঞানীরা রোগীদের মানসিক সমস্যা মোকাবিলায় সহায়তা করেন।
  • পুষ্টিবিদ: চিকিৎসার সময় রোগীর শরীরকে শক্তিশালী করার জন্য পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দেন।
  • পেইন ম্যানেজমেন্ট: চিকিৎসার সময় ব্যথা কমাতে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়।
  • সামাজিক সমর্থন: সামাজিক কর্মীরা রোগীদের এবং তাদের পরিবারকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করেন।
  • গবেষণা: নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য গবেষণা কাজ চলমান রয়েছে।

এভারকেয়ারের বিশেষ সুবিধা

  • বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট: বিভিন্ন ধরনের রক্ত ক্যান্সারের চিকিৎসায় বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এভারকেয়ারে এই সুবিধা পাওয়া যায়।
  • পেইন ক্লিনিক: ক্যান্সারের ব্যথা মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞরা সহায়তা করেন।
  • পুষ্টি পরামর্শ: রোগীর শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য পুষ্টি পরামর্শ দেওয়া হয়।

কেন এভারকেয়ার?

  • বিশ্বমানের সুবিধা: আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারা পরিচালিত।
  • রোগীর স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া: রোগীর স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা নিশ্চিত করাই এভারকেয়ারের মূল লক্ষ্য।
  • স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা: সব ধরনের চিকিৎসা এবং সেবা স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হয়।
  • দেখভাল: রোগীর এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে তাদের সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হয়।

ক্যান্সারকে হারান, জীবনকে জয় করুন

ক্যান্সার একটি চ্যালেঞ্জ, কিন্তু অসাধ্য নয়। এভারকেয়ার আপনার পাশে আছে এই যুদ্ধে। আমরা আপনাকে সুস্থ করে তুলতে সর্বাত্মক চেষ্টা করব।

আপনার সুস্থতার জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত।

 

ইমার্জেন্সি কক্ষ: জীবন বাঁচানোর প্রথম পদক্ষেপ

হঠাৎ করেই যখন কোনো অসুস্থতা বা আঘাতের কারণে জীবন বা মৃত্যুর সীমানায় পৌঁছে যাই, তখন আমাদের শেষ আশা হয়ে ওঠে ইমার্জেন্সি কক্ষ। এই কক্ষটি হাসপাতালের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেখানে দক্ষ চিকিৎসক ও নার্সরা দিনরাত কাজ করে চলেছেন জীবন বাঁচানোর জন্য।

 

ইমার্জেন্সি কক্ষে কী ঘটে?

যখন কোনো রোগীকে ইমার্জেন্সি কক্ষে নিয়ে আসা হয়, তখন চিকিৎসকরা সর্বপ্রথম রোগীর অবস্থার তীব্রতা মূল্যায়ন করেন। তারপর দ্রুত কাজ শুরু হয়।

  • প্রাথমিক মূল্যায়ন: রোগীর শ্বাস, রক্তচাপ, হৃদ্স্পন্দন, চেতনা ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়।
  • জরুরি চিকিৎসা: যদি রোগীর জীবন বিপন্ন হয়, তাহলে তাকে প্রথমে স্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যে রক্তচাপ বৃদ্ধি করা, শ্বাসকষ্ট দূর করা, রক্তপাত বন্ধ করা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
  • পরীক্ষা-নিরীক্ষা: রোগীর অবস্থা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে রক্ত পরীক্ষা, ইসিজি, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
  • বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া হয়।
  • চিকিৎসা পর্যবেক্ষণ: পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে রোগীর জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়। এরপর রোগীকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

  

ইমার্জেন্সি কক্ষে কাজ করা চিকিৎসক নার্সদের ভূমিকা

ইমার্জেন্সি কক্ষে কাজ করা চিকিৎসক ও নার্সরা অত্যন্ত দক্ষ ও প্রশিক্ষিত হয়ে থাকেন। তারা হঠাৎ করে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম। তারা রোগীর জীবন বাঁচানোর জন্য দিনরাত কাজ করে চলেছেন।

ইমার্জেন্সি কক্ষে কেন যাবেন?

  • হঠাৎ বুকে ব্যথা
  • শ্বাসকষ্ট
  • মাথা ঘোরা
  • তীব্র পেট ব্যথা
  • রক্তপাত
  • চেতনা হারানো
  • দুর্ঘটনায় আহত হওয়া

উপরোক্ত যে কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে ইমার্জেন্সি কক্ষে যান।

 

ইমার্জেন্সি কক্ষে যাওয়ার আগে

  • আপনার সাথে আপনার ওষুধের তালিকা রাখুন।
  • আপনার রক্তের গ্রুপ জানা থাকলে তা জানান।
  • আপনার সাথে আপনার পরিচয়পত্র রাখুন।

 

ইমার্জেন্সি কক্ষে যাওয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ?

  • দ্রুত চিকিৎসা পাওয়া যায়।
  • জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়।
  • জটিলতা এড়ানো যায়।

  

সর্বশেষ কথা

ইমার্জেন্সি কক্ষ হল জীবন বাঁচানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। তাই, যদি আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে দেরি না করে ইমার্জেন্সি কক্ষে যান।

 

আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নিন এবং নিরাপদ থাকুন।

 

কিডনি টিউমার: কারণ, লক্ষণ, এবং চিকিৎসা

কিডনি টিউমার হল কিডনির কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এই বৃদ্ধি সৌম্য (নন-ক্যান্সারাস) বা মারাত্মক (ক্যান্সারাস) হতে পারে। যদিও কিছু কিডনি টিউমার সৌম্য এবং প্রাণঘাতী নয়, অন্যগুলো ম্যালিগন্যান্ট হতে পারে, যা আরও গুরুতর অবস্থার দিকে পরিচালিত করে।

কিডনি টিউমারের কারণ

কিডনি টিউমারের সঠিক কারণ সবসময় জানা যায় না। তবে কিছু কারণ হতে পারে:

  • বয়স: বৃদ্ধ বয়সে কিডনি ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি থাকে।
  • ধূমপান: ধূমপান কিডনি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • স্থূলতা: অতিরিক্ত ওজন কিডনি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • পরিবারে ক্যান্সারের ইতিহাস: পরিবারে যদি কিডনি ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে তাহলে ঝুঁকি বাড়তে পারে।

কিডনি টিউমারের লক্ষণ

প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি টিউমারের কোনো লক্ষণ নাও থাকতে পারে। যখন লক্ষণ দেখা দেয় তখন সেগুলি হতে পারে:

  • মূত্রে রক্ত: প্রস্রাবে রক্ত দেখা দেওয়া কিডনি টিউমারের একটি সাধারণ লক্ষণ।
  • পাশে ব্যথা: পেটের পাশে বা পিঠের নিচের দিকে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
  • পেটে ้อน: পেটে একটি গ้อน অনুভূত হতে পারে।
  • ওজন কমে যাওয়া: কোনো কারণ ছাড়া ওজন কমে যাওয়া।
  • জ্বর: দীর্ঘস্থায়ী জ্বর।
  • অরুচি: খাবারে রুচি না থাকা।
  • অনেক পরিমাণে প্রস্রাব করা বা রাতে বারবার প্রস্রাবে যাওয়া।

কিডনি টিউমারের রোগ নির্ণয়

কিডনি টিউমারের রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়, যেমন:

  • মূত্র পরীক্ষা: মূত্রে রক্ত বা অন্যান্য অস্বাভাবিকতা খুঁজতে।
  • আল্ট্রাসাউন্ড: কিডনির ছবি তোলা।
  • সিটি স্ক্যান: কিডনির বিস্তারিত ছবি তোলা।
  • এমআরআই: কিডনির বিস্তারিত ছবি তোলা।
  • বায়োপ্সি: টিউমারের একটি ছোট টুকরো নিয়ে পরীক্ষা করা।

কিডনি টিউমারের চিকিৎসা

কিডনি টিউমারের চিকিৎসা টিউমারের ধরন, আকার, অবস্থান এবং রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। চিকিৎসার বিকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • সার্জারি: টিউমার অপসারণ করা।
  • কিমোথেরাপি: ওষুধের মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা।
  • বিকিরণ থেরাপি: বিকিরণের মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা।
  • লক্ষ্যযুক্ত থেরাপি: ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করার জন্য বিশেষ ওষুধ ব্যবহার করা।

কিডনি টিউমার প্রতিরোধ

কিডনি টিউমার প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা গুরুত্বপূর্ণ। এতে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:

  • সুষম খাদ্য গ্রহণ করা: ফল, সবজি এবং পুরো শস্য খাবার বেশি খাওয়া।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা:
  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা:
  • ধূমপান বন্ধ করা:
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা:
  • নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া:

মনে রাখবেন: কিডনি টিউমার একটি গুরুতর রোগ। তাই, যদি আপনার কিডনি টিউমারের কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য: একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

আজকের দিনে, কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। কাজের চাপ, প্রতিযোগিতা, এবং অন্যান্য কারণে অনেকেই মানসিক চাপের শিকার হচ্ছেন। এই মানসিক চাপ কাজের ক্ষমতা, পারিবারিক সম্পর্ক এবং সামগ্রিক জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে।

কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপের কারণ

কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপের অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে, যেমন:

  • কাজের বোঝা: অতিরিক্ত কাজের বোঝা, ডেডলাইন মিস করা, এবং অপ্রত্যাশিত পরিবর্তনগুলি মানসিক চাপ বাড়াতে পারে।
  • কর্মক্ষেত্রে সম্পর্ক: সহকর্মীদের সাথে মতবিরোধ, প্রশাসনের সাথে সমস্যা, এবং বৈষম্যের শিকার হওয়া মানসিক চাপের কারণ হতে পারে।
  • অনিরাপদ কর্ম পরিবেশ: শারীরিক বা মানসিকভাবে অনিরাপদ কর্ম পরিবেশ মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
  • কর্মজীবনের অনিশ্চয়তা: চাকরি হারানোর ভয়, পদোন্নতি না পাওয়া, এবং কর্মজীবনের লক্ষ্য অর্জন করতে না পারা মানসিক চাপ বাড়াতে পারে।

কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপের প্রভাব

কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যেমন:

  • শারীরিক সমস্যা: মাথাব্যথা, পেট খারাপ, ঘুমের সমস্যা, এবং দুর্বলতা।
  • মানসিক সমস্যা: উদ্বেগ, বিষণ্নতা, এবং স্ট্রেস।
  • কাজের ক্ষমতা হ্রাস: মানসিক চাপ কাজের ক্ষমতা হ্রাস করে, ভুল করার সম্ভাবনা বাড়ায়, এবং সৃজনশীলতা কমিয়ে দেয়।
  • সম্পর্কের অবনতি: পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে সম্পর্কের অবনতি হতে পারে।

কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির উপায়

কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য ব্যক্তিগতভাবে এবং সংস্থা হিসেবে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

  • ব্যক্তিগতভাবে:
    • সমস্যা সমাধান: সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করে সমাধানের চেষ্টা করা।
    • সমর্থন চাওয়া: পরিবার, বন্ধু বা মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সমর্থন চাওয়া।
    • জীবনধারা পরিবর্তন: সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা।
    • ধ্যান বা যোগ: মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান বা যোগ অনুশীলন করা।
  • সংস্থা হিসেবে:
    • সুস্থ কর্ম পরিবেশ: নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর কর্ম পরিবেশ তৈরি করা।
    • কর্মচারীদের সাথে যোগাযোগ: কর্মচারীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করে তাদের সমস্যা সম্পর্কে জানা।
    • মানসিক স্বাস্থ্য কর্মসূচি: মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কর্মসূচি চালু করা।
    • কাজের বোঝা ব্যবস্থাপনা: কর্মচারীদের কাজের বোঝা যুক্তিযুক্ত পরিসরে রাখা।

উপসংহার:

কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্যক্তিগত এবং সংস্থা উভয় স্তরেই প্রচেষ্টা চালিয়ে কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করা সম্ভব। সুস্থ কর্মক্ষেত্র মানে সুস্থ কর্মচারী এবং একটি উৎপাদনশীল সংস্থা।

 

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস: একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হল এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন মহিলা গর্ভাবস্থার সময় প্রথমবারের মতো উচ্চ রক্তশর্করা (গ্লুকোজ) মাত্রার সম্মুখীন হয়। সাধারণত গর্ভাবস্থার দ্বিতীয়ার্ধে এই সমস্যাটি দেখা দেয়।

কেন হয় গর্ভকালীন ডায়াবেটিস?

গর্ভাবস্থায় শরীরের হরমোন পরিবর্তন হয় এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যায়। ইনসুলিন হল একটি হরমোন যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এই পরিবর্তনের ফলে রক্তে শর্করা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যেতে পারে।

কারা ঝুঁকিতে থাকে?

  • আগে থেকেই ডায়াবেটিস থাকলে: যাদের আগে থেকেই টাইপ-২ ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা আরও বেশি দেখা যায়।
  • পরিবারে ডায়াবেটিস থাকলে: যাদের পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস আছে, তাদের এই সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
  • বেশি ওজন হলে: অতিরিক্ত ওজন বা মোটা হলে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
  • আগের গর্ভাবস্থায় বড় বাচ্চা হলে: আগের গর্ভাবস্থায় যাদের বড় বাচ্চা হয়েছিল, তাদের আবার গর্ভবতী হলে এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • উচ্চ রক্তচাপ, পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS) থাকলে: এই সব রোগ থাকলে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের লক্ষণ

অনেক ক্ষেত্রে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের কোনো লক্ষণ নাও দেখা দিতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা দিতে পারে:

  • অতিরিক্ত তৃষ্ণা
  • প্রায়শই প্রস্রাব করা
  • অস্পষ্ট দৃষ্টি
  • ধীরে জখম সারা
  • অতিরিক্ত ক্ষুধা
  • অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের জটিলতা

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস যদি নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, তাহলে তা মাতা ও শিশুর জন্য বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। যেমন:

  • মাতার জন্য: উচ্চ রক্তচাপ, প্রসবকালীন জটিলতা, প্রসবের পর ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি।
  • শিশুর জন্য: বড় আকারের শিশু জন্ম, জন্মের সময় সমস্যা, জন্মের পর রক্তে শর্করা কমে যাওয়া, ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি।

চিকিৎসা

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসা পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • খাদ্যাভ্যাস: স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, শর্করাযুক্ত খাবার কম খাওয়া।
  • ব্যায়াম: নিয়মিত হাঁটা, সাঁতার ইত্যাদি ব্যায়াম করা।
  • রক্তের শর্করা পরীক্ষা: নিয়মিত রক্তে শর্করা পরীক্ষা করা।
  • ওষুধ: কিছু ক্ষেত্রে ইনসুলিন বা অন্যান্য ওষুধ দিতে হয়।

প্রতিরোধ

গর্ভাবস্থার আগে থেকেই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে। যেমন:

  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা
  • সুষম খাদ্য গ্রহণ করা

মনে রাখবেন: গর্ভকালীন ডায়াবেটিস একটি গুরুতর সমস্যা। তাই যদি আপনি গর্ভবতী হন, তাহলে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং তার নির্দেশনা অনুযায়ী চিকিৎসা করান।

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার: একটি গুরুতর সমস্যা

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার হল একটি ভয়াবহ রোগ যেখানে অগ্ন্যাশয়ের কোষগুলি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। অগ্ন্যাশয় আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা হজমে সাহায্য করে এবং ইনসুলিন তৈরি করে। এই ক্যান্সার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং অন্যান্য অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের কারণ

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে কিছু কারণ এই রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে, যেমন:

  • ধূমপান: ধূমপান অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ।
  • পরিবারিক ইতিহাস: যাদের পরিবারে অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ইতিহাস আছে, তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
  • মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান: অতিরিক্ত মদ্যপান অগ্ন্যাশয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
  • স্থূলতা: অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • ডায়াবেটিস: দীর্ঘস্থায়ী ডায়াবেটিস অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • অগ্ন্যাশয়ের দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ: অগ্ন্যাশয়ের দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ (প্যানক্রিয়াটাইটিস) অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণ

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ নাও দেখা দিতে পারে। তবে রোগটি এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে:

  • পেটে ব্যথা
  • ওজন কমে যাওয়া
  • ক্লান্তি
  • বমি বমি ভাব
  • বমি
  • হলুদ বর্ণ
  • ডায়াবেটিস

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের নির্ণয়

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়, যেমন:

  • রক্ত পরীক্ষা: অগ্ন্যাশয়ের কার্যকারিতা মাপার জন্য
  • আল্ট্রাসাউন্ড: অগ্ন্যাশয়ের ছবি তোলা
  • সিটি স্ক্যান: অগ্ন্যাশয়ের বিস্তারিত ছবি তোলা
  • এমআরআই: অগ্ন্যাশয়ের বিস্তারিত ছবি তোলা
  • বায়োপসি: অগ্ন্যাশয়ের একটি ছোট টুকরো নিয়ে পরীক্ষা করা

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের চিকিৎসা

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের চিকিৎসা ক্যান্সারের ধরন, পর্যায় এবং রোগীর স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। সাধারণত চিকিৎসায় অন্তর্ভুক্ত থাকে:

  • সার্জারি: ক্যান্সারযুক্ত অংশ অপসারণ করা
  • কেমোথেরাপি: ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করার জন্য ওষুধ ব্যবহার করা
  • রেডিওথেরাপি: রেডিয়েশন ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধ

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে:

  • ধূমপান বন্ধ করা: ধূমপান অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ।
  • স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা।
  • মদ্যপান পরিহার: অতিরিক্ত মদ্যপান অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো।

উপসংহার:

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার একটি গুরুতর রোগ। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করলে এটি সুচিকিৎসাযোগ্য। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর মাধ্যমে অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

মনে রাখবেন:

  • এই তথ্যটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের উদ্দেশ্যে এবং এটি কোনো চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়।
  • কোনো ধরনের রোগের জন্য সঠিক নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নিন।