ঘাড় ব্যথা: কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিকার

আমাদের অনেকেরই দৈনন্দিন জীবনে ঘাড় ব্যথা একটা সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কম্পিউটারে কাজ করা, মোবাইল ফোন ব্যবহার, ভুল ভঙ্গিতে ঘুমানো ইত্যাদি কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা কখনও কখনও এত তীব্র হয় যে আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে। আজ আমরা ঘাড় ব্যথার কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।

 ঘাড় ব্যথার কারণ:

  • ভুল ভঙ্গি: দীর্ঘ সময় একই ভঙ্গিতে বসে থাকা, মাথা নিচু করে কাজ করা ইত্যাদি ঘাড়ের পেশীতে চাপ সৃষ্টি করে।
  • আঘাত: দুর্ঘটনা, খেলাধুলা বা কোনো ধরনের শারীরিক আঘাতের ফলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।
  • মেরুদণ্ডের সমস্যা: স্পন্ডাইলোসিস  মেরুদণ্ডের সমস্যা ঘাড় ব্যথার অন্যতম কারণ।
  • মাসল স্প্যাজম: ঘাড়ের পেশীতে অতিরিক্ত চাপ পড়লে মাসল স্প্যাজম হতে পারে।
  • অন্যান্য কারণ: সংক্রমণ, টিউমার, আর্থ্রাইটিস ইত্যাদিও ঘাড় ব্যথার কারণ হতে পারে।

 

ঘাড় ব্যথার লক্ষণ:

  • ঘাড়ে তীব্র বা হালকা ব্যথা
  • ঘাড়ে জ্বালাপোড়া
  • ঘাড়ে কঠিনতা
  • হাতে বা বাহুতে ব্যথা
  • মাথাব্যথা
     

ঘাড় ব্যথার চিকিৎসা:

ঘাড় ব্যথার চিকিৎসা কারণের উপর নির্ভর করে। সাধারণত ঘাড় ব্যথার চিকিৎসায় নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা হয়:

  • দোকানে পাওয়া ওষুধ: ব্যথানাশক ও পেশী শিথিলকারী ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • ফিজিওথেরাপি: ফিজিওথেরাপি ব্যায়াম ঘাড়ের পেশী শক্তিশালী করতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • হিট বা আইস থেরাপি: হিট বা আইস থেরাপি ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • ট্রাকশন: ট্রাকশন পদ্ধতির মাধ্যমে মেরুদণ্ডের উপরের চাপ কমানো যায়।
  • ইনজেকশন: কিছু ক্ষেত্রে স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হতে পারে।
  • সার্জারি: যদি অন্য কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি কাজ না করে তবে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।

 

ঘাড় ব্যথা প্রতিরোধ:

ঘাড় ব্যথা প্রতিরোধে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে:

  • সঠিক ভঙ্গি: দীর্ঘ সময় একই ভঙ্গিতে বসে থাকা এড়িয়ে চলুন। কম্পিউটারে কাজ করার সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: ঘাড়ের পেশী শক্তিশালী করার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন: অতিরিক্ত ওজন মেরুদণ্ডের উপর চাপ বাড়ায়।
  • ভারী বস্তু না তুলুন: ভারী বস্তু তুলতে গেলে ঘাড়ে চাপ পড়ে।
  • ঘাড়ে গরম বা ঠান্ডা কম্প্রেস দিন: ব্যথার তীব্রতা কমাতে ঘাড়ে গরম বা ঠান্ডা কম্প্রেস দিতে পারেন।

 

কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন:

  • যদি ঘাড় ব্যথা দীর্ঘদিন ধরে থাকে
  • যদি ব্যথার সাথে অন্য কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, যেমন হাতে বা বাহুতে অনুভূতি হারানো ইত্যাদি
  • যদি ব্যথা দিনে দিন বেড়ে যায়
  • যদি ব্যথা দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা দেয়

 

উপসংহার:

ঘাড় ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, এটি গুরুতর কোনো রোগের লক্ষণও হতে পারে। তাই ঘাড় ব্যথা হলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সঠিক চিকিৎসা নিলে ঘাড় ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

কিডনির পাথরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে PCNL-এর জয়যাত্রা

PCNL কি?

পিসিএনএল বা Percutaneous Nephrolithotomy হল কিডনির পাথর অপসারণের একটি অত্যাধুনিক এবং কম আক্রমণাত্মক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে চিকিৎসকরা কিডনির পাথরকে ছোট ছোট টুকরো করে তুলে ফেলেন।

কেন PCNL করা হয়?

  • বড় আকারের কিডনির পাথর: যখন কিডনির পাথর খুব বড় হয় বা অনেকগুলো পাথর থাকে তখন PCNL পদ্ধতি খুবই কার্যকরী।
  • অন্যান্য পদ্ধতি কাজ না করলে: যদি অন্য কোনো পদ্ধতি দিয়ে কিডনির পাথর না সরানো যায় তখন PCNL করা হয়।
  • কিডনিতে সংক্রমণ: কিডনিতে সংক্রমণ হলে এবং অন্য কোনো উপায় না থাকলে PCNL করা হতে পারে।

PCNL পদ্ধতি কেমন হয়?

এই পদ্ধতি সাধারণত স্থানীয় অবেদন বা স্পাইনাল অবেদনের মাধ্যমে করা হয়। চিকিৎসকরা কিডনির মাধ্যমে একটি ছোট ছিদ্র করে তার মধ্য দিয়ে একটি বিশেষ যন্ত্র প্রবেশ করান। এই যন্ত্রের সাহায্যে পাথরকে ছোট ছোট টুকরো করে তুলে ফেলা হয়। এরপর এই টুকরোগুলো শরীরের বাইরে বের করে আনা হয়।

PCNL-এর সুবিধা

  • কম আক্রমণাত্মক: অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় PCNL কম আক্রমণাত্মক।
  • দ্রুত সুস্থতা: এই পদ্ধতির পর রোগীরা খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।
  • হাসপাতালে কম দিন থাকতে হয়: সাধারণত রোগীদের হাসপাতালে কম দিন থাকতে হয়।
  • সফলতার হার বেশি: এই পদ্ধতির সফলতার হার অনেক বেশি।

PCNL-এর ঝুঁকি

  • রক্তক্ষরণ: এই পদ্ধতির সময় কিছুটা রক্তক্ষরণ হতে পারে।
  • সংক্রমণ: খুব কম ক্ষেত্রে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • কিডনিতে ক্ষতি: খুব কম ক্ষেত্রে কিডনিতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

PCNL-এর পরে

PCNL-এর পর রোগীদের কিছুদিন বিশ্রাম নিতে হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হয়। সাধারণত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রোগীরা স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করতে পারে।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?

যদি আপনার কিডনিতে পাথরের সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই একজন ইউরোলজিস্টের পরামর্শ নিন। তিনি আপনার জন্য সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করে দেবেন।

সমাপ্তি

PCNL হল কিডনির পাথর অপসারণের একটি নিরাপদ এবং কার্যকরী পদ্ধতি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে অনেক রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাই যদি আপনার কিডনির পাথরের সমস্যা হয় তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

গাইনি সার্জারি: জানুন সবকিছু

গাইনি সার্জারি হল নারীদের প্রজনন অঙ্গের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসার জন্য করা এক ধরনের অস্ত্রোপচার। এটি নারীদের স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং অনেক সমস্যার সমাধানের জন্য এই সার্জারি করা হয়।

কেন গাইনি সার্জারি করা হয়?

গাইনি সার্জারির কারণ অনেকগুলো হতে পারে, যেমন:

  • ফাইব্রয়েড: জরায়ুর মাংসপেশির অতিরিক্ত বৃদ্ধি।
  • এন্ডোমেট্রিওসিস: জরায়ুর ভেতরের আস্তরণের মতো টিস্যু জরায়ুর বাইরে বেড়ে যাওয়া।
  • ওভারিয়ান সিস্ট: ডিম্বাশয়ে তরল পূর্ণ থলির মতো গঠন।
  • জরায়ুর ক্যান্সার: জরায়ুর কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি।
  • ফ্যালোপিয়ান টিউব ব্লক: ফ্যালোপিয়ান টিউব বন্ধ হয়ে যাওয়া।
  • প্রোলাপ্স: জরায়ু, মূত্রথলি বা মলদ্বারের নিচের দিকে নেমে যাওয়া।
  • অন্যান্য: অন্যান্য অনেক সমস্যা, যেমন জন্মগত ত্রুটি, সংক্রমণ ইত্যাদি।

গাইনি সার্জারির ধরন

গাইনি সার্জারির বিভিন্ন ধরন রয়েছে, যেমন:

  • ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি: ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে পেটে একটি ক্যামেরা এবং যন্ত্রপাতি প্রবেশ করে এই সার্জারি করা হয়।
  • হিস্টেরেকটমি: জরায়ু অপসারণ।
  • মাইওমেকটমি: ফাইব্রয়েড অপসারণ।
  • ওভারেকটমি: ডিম্বাশয় অপসারণ।
  • সিস্টেকটমি: ডিম্বাশয়ের সিস্ট অপসারণ।

গাইনি সার্জারির আগে, পরে এবং সময়

  • আগে: সার্জারির আগে আপনার ডাক্তার আপনাকে একটি পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং আপনার মেডিকেল ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাইবেন।
  • সময়: সার্জারির সময় আপনাকে অজ্ঞান করে দেওয়া হবে।
  • পরে: সার্জারির পর আপনাকে কিছু সময় হাসপাতালে থাকতে হতে পারে। আপনার ডাক্তার আপনাকে ব্যথা নিরাময়ের ওষুধ এবং সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারেন।

গাইনি সার্জারির সুবিধা

  • রোগ নিরাময়: অনেক গাইনি সমস্যার চিকিৎসার জন্য গাইনি সার্জারি সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি।
  • জীবনযাত্রার মান উন্নতি: গাইনি সার্জারির মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করে আপনার জীবনযাত্রার মান উন্নত করা যায়।
  • কম আক্রমণাত্মক: ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারির মতো কিছু ধরনের গাইনি সার্জারি অন্যান্য ধরনের সার্জারির তুলনায় কম আক্রমণাত্মক।

গাইনি সার্জারির ঝুঁকি

সব ধরনের সার্জারির মতো গাইনি সার্জারিরও কিছু ঝুঁকি রয়েছে, যেমন:

  • সংক্রমণ
  • রক্তক্ষরণ
  • অ্যালার্জি
  • রক্ত জমাট বাঁধা

কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন?

যদি আপনার নীচের কোনো লক্ষণ থাকে তাহলে অবশ্যই একজন গাইনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন:

  • অস্বাভাবিক যোনি রক্তপাত
  • পেটে ব্যথা
  • পেলভিক অঞ্চলে চাপ
  • মূত্রত্যাগে সমস্যা
  • যৌন সম্পর্কের সময় ব্যথা

মনে রাখবেন: গাইনি সার্জারির সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করা জরুরি।

কিডনি স্টোন: কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিরোধ

কিডনি স্টোন বা কিডনির পাথর একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেকেরই জীবনে একবার না একবার দেখা দেয়। এটি কিডনিতে খনিজ পদার্থের কণিকা জমে জমে তৈরি হয় এবং কখনও কখনও অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে।

কিডনি স্টোন কী?

কিডনি স্টোন হল কিডনিতে তৈরি হওয়া কঠিন কণিকা। এটি সাধারণত ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, ইউরিক এসিড বা ফসফেটের মতো খনিজ পদার্থ দিয়ে তৈরি হয়। এই কণিকাগুলি ছোট বালির কণার মতো ছোট হতে পারে আবার কখনও কখনও বড় পাথরের মতো বড়ও হতে পারে।

কিডনি স্টোনের কারণ

কিডনি স্টোনের সঠিক কারণ সবসময় জানা যায় না। তবে কিছু কারণ কিডনি স্টোনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, যেমন:

  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না পান করা: পানি কম পান করলে মূত্র ঘন হয়ে যায় এবং খনিজ পদার্থ জমে কিডনি স্টোন তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
  • কিছু খাবার: অক্সালেটযুক্ত খাবার (যেমন পালং শাক, বাদাম, চকলেট) এবং সোডিয়ামযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া কিডনি স্টোনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • পরিবারে কিডনি স্টোনের ইতিহাস থাকা: যদি পরিবারের কারো কিডনি স্টোন হয়, তাহলে আপনারও হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
  • মেটাবলিক রোগ: গাউট, সিস্টিক ফাইব্রোসিস এবং কিছু অন্যান্য মেটাবলিক রোগ কিডনি স্টোনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • অন্যান্য চিকিৎসাগত অবস্থা: হাইপারপ্যারাথাইরয়েডিজম, মোচড়া রোগ এবং কিছু অন্যান্য চিকিৎসাগত অবস্থা কিডনি স্টোনের কারণ হতে পারে।
  • কিছু ওষুধ: কিছু ওষুধ সেবন করা কিডনি স্টোনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

কিডনি স্টোনের লক্ষণ

কিডনি স্টোনের লক্ষণগুলি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে এবং পাথরের আকার এবং অবস্থানের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, কিডনি স্টোন যখন কিডনি থেকে মূত্রনালীতে নামতে শুরু করে, তখন তীব্র ব্যথা হয়। এই ব্যথাকে রেনাল কোলিক বলা হয়।

  • তীব্র ব্যথা: পেট, পিঠ বা পাশে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
  • মূত্রত্যাগের সময় জ্বালাপোড়া: মূত্রত্যাগের সময় জ্বালাপোড়া অনুভূত হতে পারে।
  • মূত্রে রক্ত: মূত্রে রক্ত দেখা যেতে পারে।
  • মূত্রত্যাগের সময় কষ্ট হওয়া: মূত্রত্যাগের সময় কষ্ট হতে পারে অথবা মূত্রের ফোঁটা ফোঁটা করে পড়া।
  • বমি বমি ভাব: কিছু ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।
  • জ্বর: সংক্রমণ হলে জ্বর আসতে পারে।

কিডনি স্টোনের চিকিৎসা

কিডনি স্টোনের চিকিৎসা পাথরের আকার, অবস্থান এবং লক্ষণের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, ছোট পাথর নিজে থেকেই মূত্রের সাথে বের হয়ে যায়। তবে বড় পাথরের ক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। কিছু সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতি হল:

  • ওষুধ: ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। কিছু ওষুধ পাথরকে ছোট করে দেয় যাতে সহজে বের হয়ে যেতে পারে।
  • শকওয়েভ থেরাপি: এই পদ্ধতিতে শকওয়েভ ব্যবহার করে পাথরকে ছোট টুকরো করে দেওয়া হয়।
  • সার্জারি: খুব বড় বা জটিল পাথরের ক্ষেত্রে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।

কিডনি স্টোন প্রতিরোধ

কিছু সহজ উপায়ে কিডনি স্টোন প্রতিরোধ করা সম্ভব:

  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন: দিনে অন্তত ২-৩ লিটার পানি পান করুন।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খান: অক্সালেটযুক্ত খাবার কম খান এবং ফল, শাকসবজি এবং পুরো শস্য বেশি খান।
  • সোডিয়াম কম খান: লবণ খাওয়া কমিয়ে দিন।
  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন: অতিরিক্ত ওজন কিডনি স্টোনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: নিয়মিত ব্যায়াম স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং কিডনি স্টোন প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন: যদি আপনি কোনো ওষুধ সেবন করেন, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করুন।

কোমর ব্যাথা: কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ

কোমর ব্যাথা এক অত্যন্ত সাধারণ সমস্যা, যা একবার না একবার অনেকের জীবনেই দেখা দেয়। কাজের চাপ, ভুল ভঙ্গি, আঘাত, অথবা কোনো রোগের কারণে কোমর ব্যাথা হতে পারে। এই ব্যাথা কখনো কখনো কয়েকদিনের মধ্যেই সেরে যায়, আবার কখনো কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়তে পারে।

কোমর ব্যাথার কারণ:

  • ভুল ভঙ্গি: দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসে থাকা, ভারী জিনিস তোলা, অথবা অনুপযুক্ত ভঙ্গিতে ঘুমানোর কারণে কোমরের পেশী ও স্নায়ুতে টান পড়ে এবং ব্যাথা হয়।
  • পেশির টান: কোমরের পেশীতে টান পড়লে তীব্র ব্যাথা হয়।
  • ডিস্ক সমস্যা: মেরুদণ্ডের ডিস্ক ফেটে গেলে বা স্লিপ হয়ে গেলে কোমর ব্যাথা হতে পারে।
  • আর্থ্রাইটিস: প্রদাহজনিত রোগ, যেমন অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের কারণে কোমর ব্যাথা হতে পারে।
  • স্পনডাইলোলিস্থিসিস: মেরুদণ্ডের একটি কশেরুকা আরেকটি কশেরুকার উপর সরে গেলে এই সমস্যা হয়।
  • স্পনডাইলাইটিস: মেরুদণ্ডের জয়েন্টে প্রদাহ হওয়াকে স্পনডাইলাইটিস বলে।
  • কিডনি বা মূত্রথলির সমস্যা: কিডনি বা মূত্রথলির সংক্রমণের কারণেও কোমর ব্যাথা হতে পারে।
  • ক্যান্সার: কম ক্ষেত্রে, কোমরের ক্যান্সারের কারণেও ব্যাথা হতে পারে।

কোমর ব্যাথার লক্ষণ:

  • তীব্র বা হালকা কোমর ব্যাথা
  • কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথা ছড়িয়ে পড়া
  • কোমর নড়াচড়া করতে কষ্ট হওয়া
  • পা বা পায়ের আঙুল অসাড় হয়ে যাওয়া

কোমর ব্যাথার চিকিৎসা:

  • দেখাশুনা: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, কোমর ব্যাথা নিজে থেকেই কয়েকদিনের মধ্যে সেরে যায়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, গরম পানি সেকে  স্বস্তি পাওয়া যায়।
  • ফিজিওথেরাপি: ফিজিওথেরাপি ব্যায়ামের মাধ্যমে কোমরের পেশী শক্তিশালী করা হয় এবং ব্যাথা কমাতে সাহায্য করা হয়।
  • ওষুধ: ব্যথানাশক ওষুধ, পেশী শিথিলকারী ওষুধ, এবং স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হতে পারে।
  • সার্জারি: খুবই জটিল ক্ষেত্রে, সার্জারির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।

কোমর ব্যাথা প্রতিরোধ:

  • সঠিক ভঙ্গি: দাঁড়ানো, বসা, এবং ঘুমানোর সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম করলে কোমরের পেশী শক্তিশালী হয় এবং ব্যাথার সম্ভাবনা কমে যায়।
  • ভারী জিনিস তোলার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন: ভারী জিনিস তোলার সময় গোড়ালি থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে শরীর সোজা করে তুলুন।
  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন: অতিরিক্ত ওজন কোমরের উপর চাপ বাড়িয়ে দেয়।
  •  মুক্ত থাকুন: মানসিক চাপ কোমর ব্যাথার কারণ হতে পারে।

কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন:

  • যদি কোমর ব্যাথা কয়েক দিনের মধ্যে না কমে।
  • যদি ব্যাথা খুব তীব্র হয়।
  • যদি ব্যাথার সাথে জ্বর, অসাড়তা, বা দুর্বলতা অনুভূত হয়।

উপসংহার:

কোমর ব্যাথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, একে উপেক্ষা করা উচিত নয়। সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে কোমর ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ব্রঙ্কোস্কোপি: ফুসফুসের ভেতরে এক নজরে

ব্রঙ্কোস্কোপি হল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি, যেখানে একজন ডাক্তার একটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে আপনার ফুসফুসের ভেতরের অংশ পরীক্ষা করেন। এই যন্ত্রটি একটি পাতলা, নমনীয় টিউব যার এক প্রান্তে একটি ক্যামেরা এবং আলো থাকে। এই টিউবটি আপনার নাক বা মুখ দিয়ে আপনার শ্বাসনালীর মধ্য দিয়ে ফুসফুসে প্রবেশ করানো হয়।এর মাধ্যমে ফুসফুসের ভেতর সরাসরি দেখার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় এবং ক্ষেত্রবিশেষে নিরাময়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রসিডিওর করা হয়ে থাকে।

কেন ব্রঙ্কোস্কোপি করা হয়?
ব্রঙ্কোস্কোপি বিভিন্ন কারণে করা হয়, যেমন:
• ফুসফুসের ক্যান্সার: ফুসফুসের ক্যান্সারের শনাক্তকরণ এবং পরীক্ষা করার জন্য। এই পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর এবং প্রয়োজনীয়। অনেক ক্ষেত্রে ফুসফুসের কোন কলাপ্স বা কুচকে যাওয়া রোগীর ক্ষেত্রে দ্রুত রোগ নির্ণয় ও শ্বাসনালীর বাধা অপসারণের জন্য ব্রংকোস্কপি অত্যাবশকীয় পরীক্ষা।

• শ্বাসনালীর সংক্রমণ: নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, যক্ষ্ণা বা অন্যান্য সংক্রমণের কারণ খুঁজে বের করার জন্য।

• কাশি: দীর্ঘস্থায়ী কাশির কারণ খুঁজে বের করার জন্য।

• শ্বাসকষ্ট: শ্বাসকষ্টের কারণ খুঁজে বের করার জন্য।

• ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধা: ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধার কারণ খুঁজে বের করার জন্য।

• বাইরের কোন বস্তু: ফুসফুসে কোনো বাইরের কোন বস্তু যেমন- পয়সা, খাবার, আলগা দাঁত,কোন খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদি আটকে গেলে তা অপসারণ করার জন্য। বিশেষত বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এভারকেয়ার হাসপাতাল নিরাপদভাবেই অপসারণ এর কাজ করে আসছে।

ব্রঙ্কোস্কোপির প্রক্রিয়া
ব্রঙ্কোস্কোপি সাধারণত একটি অ্যাম্বুলেটরি পদ্ধতি, যার মানে আপনাকে হাসপাতালে রাতে থাকতে হবে না। পদ্ধতির আগে আপনাকে কিছু নির্দেশাবলী দেওয়া হবে, যেমন:
• পদ্ধতির আগের রাতে মধ্যরাতের পরে কিছু খাওয়া বা পান করা এড়িয়ে চলুন।
• আপনি যে ওষুধগুলি নিয়মিত খান সেগুলি সম্পর্কে আপনার ডাক্তারকে বলুন।
• পদ্ধতির সময় আপনাকে শিথিল করার জন্য একটি ওষুধ দেওয়া হতে পারে।
পদ্ধতির সময়, ডাক্তার ব্রঙ্কোস্কোপটি আপনার নাক বা মুখ দিয়ে আপনার শ্বাসনালীর মধ্য দিয়ে ফুসফুসে প্রবেশ করাবেন। এই সময় আপনি কিছুটা অস্বস্তি অনুভব করতে পারেন, যেমন গলায় চুলকানি বা কাশি।

ব্রঙ্কোস্কোপির পরে
ব্রংকোস্কপির পরে আপনি কিছুটা গলা ব্যথা বা কাশি অনুভব করতে পারেন। আপনার ডাক্তার আপনাকে কিছু নির্দেশাবলী দিতে পারেন, যেমন:
• কিছু সময় ধরে তরল খাবার খাওয়া।
• কয়েক দিন ধরে ধূমপান না করা।

ব্রঙ্কোস্কোপির ঝুঁকি
ব্রঙ্কোস্কোপি সাধারণত একটি নিরাপদ পদ্ধতি, তবে এর কিছু ঝুঁকি রয়েছে, যেমন:
• রক্তপাত
• সংক্রমণ
• শ্বাসকষ্ট
• অ্যানেস্থেসিয়ার প্রতিক্রিয়া
তবে এগুলো খুব অল্প সময়ের জন্য হয়ে থাকে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্রংকোস্কপির কিছুক্ষণ পরেই ঠিক হয়ে যায়।

উপসংহার
ব্রঙ্কোস্কোপি ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যা নির্ণয় এবং চিকিৎসার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। যদি আপনার ফুসফুসের কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে আপনার ডাক্তার ব্রঙ্কোস্কোপি করার পরামর্শ দিতে পারেন। পদ্ধতির আগে আপনার ডাক্তারের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে নিজেকে প্রস্তুত করুন।

TURP: প্রোস্টেটের সমস্যার জন্য নিরাপদ এবং কার্যকর চিকিৎসা

TURP কি?

TURP বা Transurethral Resection of the Prostate হল প্রোস্টেট গ্রন্থির একটি অংশ অপসারণের একটি সাধারণ শল্যচিকিৎসা পদ্ধতি। এটি প্রায়শই বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে দেখা দেওয়া প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট মূত্রত্যাগের সমস্যা নিরাময়ের জন্য করা হয়।

কেন TURP করা হয়?

  • প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি: বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হতে পারে এবং মূত্রনালিকাকে চাপ দিতে পারে, যার ফলে মূত্রত্যাগে সমস্যা হয়।
  • মূত্রত্যাগে বাধা: প্রোস্টেট বড় হওয়ার কারণে মূত্রনালি সংকীর্ণ হয়ে যেতে পারে এবং মূত্রত্যাগে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
  • মূত্রথলির সংক্রমণ: বাধাগ্রস্ত মূত্রত্যাগ মূত্রথলিতে সংক্রমণের কারণ হতে পারে।
  • রাতে বারবার মূত্রত্যাগ: প্রোস্টেটের বৃদ্ধির কারণে রাতে বারবার মূত্রত্যাগের প্রয়োজন হতে পারে।

TURP পদ্ধতি কেমন হয়?

TURP একটি অস্ত্রোপচার যা সাধারণত স্পাইনাল অবেদনের অধীনে করা হয়। এই পদ্ধতিতে, একটি বিশেষ যন্ত্র (রেসেক্টোস্কোপ) মূত্রনালির মাধ্যমে প্রোস্টেটে প্রবেশ করানো হয়। এই যন্ত্রের সাহায্যে অতিরিক্ত প্রোস্টেট টিস্যু কেটে ফেলা হয়।

TURP-এর সুবিধা

  • মূত্রত্যাগের উন্নতি: TURP মূত্রত্যাগের সমস্যাগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করতে পারে।
  • রাতে মূত্রত্যাগ কমে: TURP রাতে বারবার মূত্রত্যাগের প্রয়োজন কমিয়ে দিতে পারে।
  • মূত্রথলির সংক্রমণের ঝুঁকি কমে: মূত্রত্যাগের বাধা দূর হওয়ার কারণে মূত্রথলির সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়।
  • দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল: TURP-এর ফলাফল সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয়।

TURP-এর ঝুঁকি

  • রক্তক্ষরণ: সব অস্ত্রোপচারের মতো TURP-এর সময় কিছুটা রক্তক্ষরণ হতে পারে।
  • সংক্রমণ: খুব কম ক্ষেত্রে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • মূত্রত্যাগে সমস্যা: কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের পর মূত্রত্যাগে কিছু সমস্যা হতে পারে, যা সাধারণত অস্থায়ী হয়।
  • যৌন কার্যকলাপে পরিবর্তন: TURP যৌন কার্যকলাপে কিছু পরিবর্তন আনতে পারে।

TURP-এর পরে

TURP-এর পর রোগীদের কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হয় এবং নিয়মিত ফলোআপ করতে হয়।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?

যদি আপনার মূত্রত্যাগে সমস্যা হয়, তাহলে অবশ্যই একজন ইউরোলজিস্টের পরামর্শ নিন। তিনি আপনার জন্য সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করে দেবেন।

সমাপ্তি

TURP হল প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট মূত্রত্যাগের সমস্যা নিরাময়ের একটি কার্যকরী পদ্ধতি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে অনেক রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাই যদি আপনার মূত্রত্যাগে সমস্যা হয় তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

কিডনি রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার গুরুত্ব

আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল কিডনি। এই অঙ্গটি আমাদের রক্তকে পরিশুদ্ধ করে, অতিরিক্ত পানি ও বিষাক্ত পদার্থকে বের করে দেয়। কিন্তু, বিভিন্ন কারণে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগের লক্ষণ খুব কমই বোঝা যায়, তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।

 

কেন নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করানো উচিত?

  • প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়: অনেক সময় কিডনি রোগের লক্ষণ খুব কমই বোঝা যায়। নিয়মিত পরীক্ষা করলে এই সমস্যাগুলো প্রাথমিক পর্যায়েই ধরা পড়ে।
  • সময়মতো চিকিৎসা: প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া যায়। এতে রোগের অগ্রগতি রোধ করা সম্ভব হয়।
  • জীবনযাত্রার মান উন্নতি: কিডনি রোগ যদি গুরুতর হয়ে যায়, তাহলে জীবনযাত্রার মান কমে যায়। নিয়মিত পরীক্ষা করে এই সমস্যা এড়ানো যায়।

কোন কোন পরীক্ষা করানো উচিত?

  • রক্ত পরীক্ষা: রক্তের ক্রিয়েটিনিন এবং ইউরিয়া নাইট্রোজেনের মাত্রা পরীক্ষা করে কিডনির কার্যক্ষমতা মূল্যায়ন করা হয়।
  • মূত্র পরীক্ষা: মূত্রে প্রোটিন, রক্ত কোষ বা অন্যান্য অস্বাভাবিক উপাদানের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়।
  • আল্ট্রাসাউন্ড: কিডনির আকার, আকৃতি এবং অভ্যন্তরীণ গঠন পরীক্ষা করার জন্য আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়।

কাদের নিয়মিত পরীক্ষা করানো উচিত?

  • ডায়াবেটিস রোগীরা: ডায়াবেটিস কিডনি রোগের একটি প্রধান কারণ।
  • উচ্চ রক্তচাপ রোগীরা: উচ্চ রক্তচাপও কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
  • পরিবারে কিডনি রোগের ইতিহাস থাকলে: পারিবারিক ইতিহাস কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
  • অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা থাকলে: স্থূলতা কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
  • অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ সেবনকারীরা: কিছু ব্যথানাশক ওষুধ কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

কত ঘন ঘন পরীক্ষা করানো উচিত?

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত পরীক্ষা করানো উচিত। সাধারণত বছরে একবার কিডনি ফাংশন টেস্ট করানো ভালো। যদি কোনো ঝুঁকির কারণ থাকে, তাহলে আরও ঘন ঘন পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।

কিডনি সুস্থ রাখার উপায়

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্য: স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, যাতে অতিরিক্ত লবণ, চিনি এবং চর্বি না থাকে।
  • পর্যাপ্ত পানি পান: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম করলে কিডনি সুস্থ থাকে।
  • ধূমপান মদ্যপান পরিহার: ধূমপান এবং মদ্যপান কিডনিকে ক্ষতি করে।

উপসংহার

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। সুস্থ থাকতে চাইলে, নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন।

 

Bronchoscopy: A Valuable Tool for Diagnosing and Treating Lung Conditions

Bronchoscopy is the very helpful and important respiratory procedure that may take only 10-20 minutes.

Bronchoscopy can be used to diagnose and treat a variety of lung conditions, including:

  • Lung cancer
  • Chronic cough
  • Asthma
  • Chronic obstructive pulmonary disease (COPD)
  • Pneumonia
  • Bronchiectasis (a condition that causes widening of the bronchi)
  • Foreign body aspiration (inhaling an object into the lungs)

Bronchoscopy can also be used to collect samples of tissue or fluid from the lungs for testing.

Types of bronchoscopy

There are two main types of bronchoscopy:

  • Flexible bronchoscopy: This is the most common type of bronchoscopy. It is done with a thin, flexible tube that can be easily navigated through the airways.
  • Rigid bronchoscopy: This type of bronchoscopy is less common, but it may be necessary if the doctor needs to view a larger airway or remove a foreign body. Rigid bronchoscopes are larger and stiffer than flexible bronchoscopes.

What to expect during a bronchoscopy

Bronchoscopy is usually performed under sedation or light anesthesia. This will help you relax and make the procedure more comfortable.

The doctor will insert the bronchoscope through your nose or mouth and down your throat. The bronchoscope will be guided through your airways using a video monitor. The doctor will then be able to examine the inside of your lungs.

If the doctor needs to collect a sample of tissue or fluid, they will insert a small instrument through the bronchoscope.

The bronchoscopy procedure usually takes about 30-60 minutes.

After a bronchoscopy

After a bronchoscopy, you may experience some throat soreness or hoarseness. You may also have some coughing or sneezing. These symptoms are usually mild and go away on their own within a few days.

If you have any concerns after a bronchoscopy, be sure to talk to your doctor.

 

Author:
Dr. Mohammad Nazmul Hasnine Nawshad
MBBS, BCS (Health), MD (Chest Diseases)
Attending Consultant
Respiratory Medicine

World suicide prevention day-“Creating Hope Through Action”

suicide prevention

World suicide prevention day-“Creating Hope Through Action”

Dr. Shaafi Raaisul Mahmood

Writer:
Dr. Shaafi Raaisul Mahmood
MBBS, MD (Psychiatry)
Attending Consultant
Psychiatry & Mental Health At Evercare Hospital Chattogram

World suicide prevention day is established by International Association of Suicide Prevention in conjunction with World Health organization (WHO).

This day is celebrated every year on September 10th.

The goals of this celebration are-

  • To draw attention to this issue.
  • To implement actions to prevent suicide.
  • To increase the awareness among communities, governments and organizations.
  • To reduce stigma.
  • To provide a singular message that suicide is preventable.

According to the report of World Health organization (WHO), there are currently more than 700000 suicides per year worldwide and each suicide profoundly effects many more people .

So  suicide prevention is a public health priority, and to reduce the suicide mortality rate urgent action is required.

There are many causes of suicide and among them depression is the prominent one.

“Creating Hope Through Action” is the triennial theme for the World Suicide Prevention Day from 2021-2023. This theme reflects that through actions we can prevent suicide, encourage hope and to understand that suicide is not a solution, there is an alternative to suicide.

By creating hope through action, we can signal to people experiencing suicidal thoughts that there is hope and that we care and want to support them. It also suggests that our actions, no matter how big or small, may provide hope to those who are struggling. (Source- WHO)

WHO is continuing work with its partners to support countries to take concrete measures in this direction.

 

 

 

 

বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস- “কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করা”

ডাঃ শাফী রাইসুল মাহমুদ
এমবিবিএস, এমডি (সাইকিয়াট্রি)
এ্যাটেন্ডিং কনসালটেন্ট – সাইকিয়াট্রি

 

বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সাথে যৌথভাবে আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দিনটি প্রতি বছর ১০ই সেপ্টেম্বর পালিত হয়। এই উদযাপনের লক্ষ্য হল-

• এই সমস্যার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা।
• আত্মহত্যা প্রতিরোধে পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা।
• সম্প্রদায়, সরকার এবং সংস্থাগুলির মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
• মানসিক সমস্যা ও আত্মহত্যার কারণগুলোর প্রতি বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি কমিয়ে আনা।
• আত্মহত্যা যে প্রতিরোধযোগ্য তার একটি একক বার্তা প্রদান করা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) রিপোর্ট অনুসারে, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ৭ লাখ এরও বেশি আত্মহত্যা হয় এবং প্রতিটি আত্মহত্যা আরও অনেক মানুষকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তাই আত্মহত্যা প্রতিরোধ একটি জনস্বাস্থ্য অগ্রাধিকার, এবং আত্মহত্যার কারণে মৃত্যুর হার কমাতে জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন। আত্মহত্যার অনেক কারণ রয়েছে এবং তার মধ্যে বিষণ্নতা একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

২০২১-২০২৩ সাল পর্যন্ত বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসের ত্রিবার্ষিক থিম হল “কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করা”। এই থিমটি প্রতিফলিত করে যে কর্মের মাধ্যমে আমরা আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে পারি, আশাকে উত্সাহিত করতে পারি এবং বুঝতে পারি যে আত্মহত্যা কোনও সমাধান নয়, আত্মহত্যার বিকল্প রয়েছে। কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করার মাধ্যমে, আমরা আত্মঘাতীমূলক চিন্তার সম্মুখীন হওয়া লোকেদের কাছে ইঙ্গিত দিতে পারি যে অবশ্যই  আশা আছে এবং আমরা এই আশাকে গুরুত্ব দেই ও যত্ন করি এবং তাদের সমর্থন করতে চাই।

তাছাড়া আমাদের উদ্যোগ ও কর্ম গুলি যত বড় বা ছোট হোক না কেন, যারা সংগ্রাম করছে তা তাদের আশার আলো হতে পারে। (সূত্র- WHO) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার অংশীদারদের সাথে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যা দেশগুলিকে এইসব ক্ষেত্রে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করে।